Explanation:
ভূমিকা: দুর্নীতি মানে দুর্নীতি + আচরণ। দুর্নীতিবাজ মানে খারাপ বা নষ্ট এবং আচার মানে আচার। অর্থাৎ দুর্নীতির আভিধানিক অর্থ হলো সেই আচরণ যা কোনোভাবেই অনৈতিক ও অন্যায়। যখন কোনো ব্যক্তি বিচার ব্যবস্থার স্বীকৃত নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অন্যায় আচরণ করতে শুরু করে, তখন সেই ব্যক্তিকে দুর্নীতিবাজ বলা হয়।
আজ সোনার পাখি নামে ভারতের মতো দেশে দুর্নীতি তার শিকড় বিস্তার করছে। আজ ভারতে এমন অনেক লোক আছে যারা দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতির দিক থেকে আজ ভারত বিশ্বের 94তম স্থানে রয়েছে। ঘুষ, কালোবাজারি, ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়ানো, টাকা দিয়ে কাজ করা, সস্তা জিনিস বিক্রি এবং দামে বিক্রি করা ইত্যাদি দুর্নীতির অনেক রূপ রয়েছে। দুর্নীতির অনেক কারণ রয়েছে। প্রধান দুর্নীতি হচ্ছে ঘুষ, নির্বাচনে কারচুপি, ব্ল্যাকমেইলিং, ট্যাক্স ফাঁকি, মিথ্যা মামলা, পরীক্ষায় প্রতারণা, প্রার্থীর ভুল মূল্যায়ন, চাঁদাবাজি, চাঁদাবাজি, বিচারকদের পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্ত, অর্থের বিনিময়ে ভোট দেওয়া, অর্থ ও মদ বিতরণ ইত্যাদি। টাকা নিয়ে রিপোর্ট ছাপানো, কাজ করিয়ে নগদ টাকা দেওয়া, এসবই দুর্নীতি।
দুর্নীতির কারণ:
অসন্তোষ - যখন কেউ অভাবের কারণে ভোগে, তখন সে কলুষিত চর্চায় লিপ্ত হতে বাধ্য হয়।
স্বার্থপরতা ও বৈষম্য: বৈষম্য, অর্থনৈতিক, সামাজিক বা সম্মান, পদ ও প্রতিপত্তির কারণে একজন ব্যক্তি নিজেকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলে। যে ব্যক্তি হীনমন্যতা ও ঈর্ষার শিকার হয় সে দুর্নীতি অবলম্বন করতে বাধ্য হয়। এছাড়া ঘুষ, স্বজনপ্রীতি ইত্যাদিও দুর্নীতির জন্ম দেয়।ভারতে ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি: দুর্নীতি একটি রোগের মতো। আজ ভারতে দুর্নীতি দ্রুত বাড়ছে। এর শিকড় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সময়মতো এটি বন্ধ করা না হলে তা সারাদেশকে গ্রাস করবে। দুর্নীতির প্রভাব অনেক বিস্তৃত।জীবনের কোনো ক্ষেত্রই এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। আমরা যদি এই বছরের কথাই বলি, তাহলে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যা দুর্নীতির ক্রমবর্ধমান প্রভাব দেখায়। আইপিএলে খেলোয়াড়দের স্পট ফিক্সিংয়ের মতো, অনেকে চাকরিতে ভালো পদ পাওয়ার তাগিদে ঘুষ দিতেও বাদ যান না। আজ ভারতের প্রতিটি অংশ এই রোগে আক্রান্ত।
দুর্নীতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা: এটি একটি ছোঁয়াচে রোগের মতো। সমাজের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি বন্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমানে দুর্নীতির অবস্থা এমন যে একজন ব্যক্তি ঘুষের মামলায় ধরা পড়ে ঘুষ দিলেই পার পেয়ে যায়।
এই অপরাধের কঠোর শাস্তি না হলে এই রোগটি সারা দেশকে উইপোকার মতো খেয়ে ফেলবে। মানুষকে নিজের মধ্যে সততা গড়ে তুলতে হবে। ভালো আচরণের সুফল আগামী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
উপসংহার: দুর্নীতি আমাদের নৈতিক মূল্যবোধের উপর সবচেয়ে বড় আক্রমণ। দুর্নীতির সাথে জড়িতরা স্বার্থপরতায় অন্ধ হয়ে জাতির নাম বদনাম করছে।
সারা বিশ্বে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ 31 অক্টোবর 2003 তারিখে একটি প্রস্তাব পাস করে, এটিকে 'আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস' হিসেবে ঘোষণা করে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে সমগ্র জাতি ও বিশ্বের যোগদানকে একটি শুভ ঘটনা বলা যেতে পারে, কারণ আজ দুর্নীতি কোনো একটি দেশের সমস্যা নয়, সমগ্র বিশ্বের সমস্যা।